স্মার্ট-ফোন :
স্মার্ট-ফোন হচ্ছে একটি ফোন যা তৈরি করা হয়েছে বিশেষ কিছু বাড়তি সুবিধা দিয়ে। সাধারণত একটি স্মার্ট-ফোনে পিডিএ, ডিজিটাল ডায়েরী, পোর্টেবল মিডিয়া প্লেয়ার, ডিজিটাল ক্যামেরা, পকেট ভিডিও ক্যামেরা এবং জিপিএস ন্যাভিগেশনের সকল সুবিধাই থাকে। আরও থাকে ওয়াই-ফাই এবং অনেক কিছু।
সহজ কথায় বলতে গেলে বলতে হয় ‘স্মার্ট টেকনোলজি’ব্যবহার করে যে সকল ফোন তাদের ‘স্মার্ট ফোন’ বলে।
স্মার্ট টেকনোলজি :
ইংরেজিতে ‘S.M.A.R.T.’ যার পূর্ণ রূপ হলও (Self-Monitoring, Analysis and Reporting Technology) একে আবার ‘SMART’ এইভাবেও লেখা হয়।
অর্থাৎ যে ডিভাইস নিজেই নিজেকে মনিটরিং (দেখাশুনা) করতে পারে, পর্যবেক্ষণ করতে পারে, সমস্যা নির্ণয় করতে পারে এবং সেই সাথে নিজেই রিপোর্ট প্রদান করতে পারে তাকে স্মার্ট টেকনোলজি বলা হয়।
যেমন : কোন স্মার্ট ডিভাইস নিজেই তার তাপমাত্রা পরিমাপ করবে (কতটুকু গরম হয়েছে), নিজেই এনালাইসিস করবে এই গরমটি উপযুক্ত কিনি, যদি গরম বেশি হয়ে যায় তাহলে রিপোর্ট দেবে এবং প্রয়োজনে নিজেই নিজেকে শাট-ডাউন বা বন্ধ করে দেবে।
আর এই স্মার্ট টেকনোলজিতে যাদের অবদান রয়েছে তাদের ভিতরে গুগলের (এন্ড্রয়েড), এ্যাপলের (আইও-এস) ইত্যাদিই প্রধান।
তার মানে উপরের নিয়ম অনুযায়ী যে সকল ডিভাইস স্মার্ট টেকনোলজিকে ব্যবহার করতে পারে সেই সকল ডিভাইসই হলও স্মার্ট ডিভাইস। সেটা ফোন হলে স্মার্ট-ফোন, টিভি হলে স্মার্ট টিভি ইত্যাদি।
এন্ড্রয়েড এর সিকিউরিটি দিক কেমন ?
এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন ‘স্যান্ডবক্স’ এর মাধ্যমে রান হয়। ‘স্যান্ডবক্স’ হলও কম্পিউটার নিরাপত্তার এক ম্যাকানিজম। যা পরিক্ষিত নয় এমন কোডগুলিকে পরীক্ষা করে, যখন সেই প্রোগ্রামগুলি রান করার জন্য চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, ইহা এমন সকল প্রোগ্রামকে রান করানোর সময় চেক করে যে সকল প্রোগ্রাম তার কাছে ট্রাস্টেড মনে হয় নি – যেমন : থার্ড-পার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করে যদি কোন প্রোগ্রাম রান করার জন্য চেষ্টার করে।
এছাড়াও এর রয়েছে পারমিশন সিস্টেম। যখন এন্ড্রয়েডে কোন এপ্লিক্যাশান ইনস্টল হতে চায় তখন সেটা অপেক্ষায় থাকে ব্যবহারকারীর অনুমতির জন্য। ব্যবহারকারী ম্যাসেজ পড়ে যদি তাকে অনুমতি দেয় তাহলেই সেই এপ্লিকেশনটি ইন্সটল হতে পারবে অন্যথায় পারবে না। এছাড়াও এন্ড্রয়েডের জন্য সকল প্রয়োজনীয় এপ্লিকেশন রয়েছে ‘গুগল প্লে স্টোরে’ যেখানে প্রতিটি এপ্লিকেশনের বিস্তারিত বর্ণনা থাকে, সকল রিকোয়ারমেন্টস থাকে।
যেমন : কোন একটি এপ্লিকেশন ইন্সটলের সময় ম্যাসেজ আসতে পারে এই রকম ‘যদি এই এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করতে চান, তাহলে একে কিছু পারমিশন দিতে হবে। এই এ্যাপ টি ফোনের ভাইব্রেশান সিস্টেমটি ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু এছাড়া অন্য কিছুই ইহা একসেস করবে না ইত্যাদি ইত্যাদি’।
আপনার শুধু কষ্ট করে ম্যাসেজটি বা রিকোয়ারমেন্টসগুলি একটু পড়ে নিতে হবে কোন এপ্লিকেশন ইন্সটলের পূর্বে।
এছাড়াও আপনি ব্যবহার করতে পারেন অতিরিক্ত সিকিউরিটি সিস্টেম। অনেক ধরনের সিকিউরিটি এপ্লিকেশন পাওয়া যায় এন্ড্রয়েডের জন্য। যেমন : Lookout Mobile Security, AVG Technologies, AVAST Mobile Security, McAfee এমনকি বিখ্যাত সেই Kaspersky Mobile Security । তবে এর ভিতরে যারা ফ্রী সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করতে চান এবং ভালোমানেরটা, তাদের জন্য রয়েছে Lookout, AVG, AVAST ইত্যাদি। আমি রেকোমেন্ড করবো ‘AVG Mobile Security’ টা ব্যবহার করার জন্য।
( যদিও আমি ব্যবহার করছি ‘Kaspersky Mobile Security’ যা ৬ মাসের লাইসেন্স করা এবং আমার এক বন্ধু আমাকে গিফট করেছে। এটা বর্তমানে ক্যাসপারস্কাই এর তৈরি করা পেনড্রাইভের সাথে বিনামূল্যে বিতরন করা হচ্ছে, আর দাম রাখা হচ্ছে ৮০০ টাকার মত। )
এন্ড্রয়েডের জন্য এমন অনেক এপ্লিকেশন রয়েছে যে সকল এপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি ঘরে বসেই ইন্টারনেট এবং জিপিএস ব্যবহার করে আপনার এন্ড্রয়েড ডিভাইসের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবেন। যেমন : যদি আপনার ফোনটি পথে কোথাও পড়ে যায় আর আপনি খুঁজে না পান, তখন নেট ব্যবহার করে সেই ফোনটির সঠিক লোকেশনটি বেড় করতে পারবেন। এছাড়াও ফোনটিকে একসেস করতে পারবেন কোন কম্পিউটার আর ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যদি ফোনটি চুরি হয়ে যায় আর কিছুই করার না থাকে তাহলে আপনি আপনার সেই ফোনটির যাবতীয় তথ্য রিমোটলী মুছে দিতে পারবেন, এমনকি কে ওটা নিয়েছে তার ছবিও পেয়ে যাবেন অটোমেটিক্যালী, ফোনটিকে লক করা থেকে শুরু করে অকেজো করে দিতে পারবেন সেই চোরটি আর কিছুই করতে পারবেনা, এছাড়াও লোকেশন বেড় করতে পারবেন ফোনটি কোথায় রয়েছে।
ক্যাসপারস্কাই এর সিকিউরিটি সিস্টেমটাতেই এই সকল সুবিধাগলি আপনি পেয়ে যাবেন। এছাড়াও এভাস্ট, লুকআউট ইত্যাদি সিকিউরিটি সিস্টেমগুলিতেও কম/বেশি এই ধরনের সুবিধাগুলি বিনামূল্যে পেতে পারেন।
এন্ড্রয়েড এর বাজার :
আমার মনে হয় এখানে এই বিষয় নিয়ে বেশি লেখার প্রয়োজন নাই। আবার যা না বললেই নয় তা হচ্ছে, এতদিন স্মার্ট-ফোনের মার্কেট ছিল আই-ফোনের দখলে যার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। কিন্তু এন্ড্রয়েড এসে আই-ফোনকে হেলিয়ে দিয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই আই-ফোনকে পেছনে রেখেছে এই এন্ড্রয়েড এর স্মার্ট-ফোন। আর পৃথিবীর সর্বাধিক বিক্রিত স্মার্ট-ফোনের তালিকায় একদম শীর্ষে তার নাম লিখতে সমর্থ হয়েছে।
আই-ফোন ৪ কে যেমন পেছনে ফেলে স্মার্ট-ফোনের তালিকায় এগিয়ে ছিল স্যামসাং এর গ্যালাক্সি এস ২। এছাড়াও আরও বেশি কিছু দিক থেকে এন্ড্রয়েড স্মার্ট-ফোন বাজার দখল করে আছে।
(বি: দ্র: এডমিনের অনুমতি ব্যতীত এই লেখা অন্য কোথাও পোস্ট করা যাবে না। একান্ত প্রয়োজনে যদি কেউ শেয়ার করতেই চান তাহলে অবশ্যই এই ব্লগটির লিংক ব্যবহার করুন।)
ধারাবাহিকতা ছিলো লেখায়, আমাকে পরের পোষ্টগুলো পরতেও আগ্রহী করে তুলেছেন আপনি 🙂
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। 🙂