কিছু কথা :
(প্রথমেই বলে নিচ্ছি, এই বার্তি কথাগুলো অযথাই মনে হবে। তারপরেও বেসিক আলোচনায় এই কথাগুলো না বললেই নয়। বেসিক পর্ব শেষ হলেই পরবর্তী আলোচনা হবে শুধুমাত্র এ্যাপ/গেম এর রিভিউ ও ডাউনলোড এবং এ্যাপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে।)
আমি কোন এন্ড্রয়েড পণ্ডিত নই। এই বিষয়ে আমি এক ছাত্র মাত্র। নেট ঘেঁটে যেটুকু জানতে পারছি আর সামনে পারবো সেই সব আমি এই বইতে শেয়ার করবার চেষ্টা করবো। অনেকেই আছে নেট ঠিক মত ঘাটে না বা ঘাটার পর যখন দেখে ইংরেজিতে অনেক অনেক লেখা তখন নিরাশ হয়ে যায়। তাদের জন্য আমি খুবই সহজে লেখার চেষ্টা করবো। কোন কিছুরই বিস্তারিততে না গিয়ে যা জানা এই মুহূর্তে প্রয়োজন একজন নতুন হিসাবে ঠিক সেইটুকুই দিতে চেষ্টা করবো।
আমি বরাবরই টেকনোলজির প্রতি আগ্রহী। নিত্যনতুন গ্যাজেট এর ব্যাপারে জানার ইচ্ছেটা প্রবল। আর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার সুবাদে প্রোগ্রামিং এর প্রতিও ঝোঁকটা বেড়ে গেছে কিছুটা (যদিও ক্লাসের এ্যাসাইনমেন্ট ছাড়া প্রোগ্রামিং এর কিছুই পারি না :p )
আমি আবার আমার সেলফোন পরিবর্তনে এক ধাপ এগিয়ে। রিসেন্টলি আমি যে সেলফোনটি ব্যবহার করছি সেটা হল একটি স্মার্ট-ফোন, যার অপারেটিং সিস্টেম ‘এন্ড্রয়েড’।
আমি যে অনেক জানি এই ব্যাপারে, তা কিন্তু না। তবে, যেটুকু জানি, যখনই জানবো সবই এখানে শেয়ার করার চেষ্টা করবো।
আমার কিছু ছোটভাই/বন্ধু, যারা আমার হাতে এই ফোনটি দেখে হুট করে এন্ড্রয়েড ফোন কিনে পড়েছে মহা বিপাকে আর আমাকে প্রায়ই ফোন করে, ফেইসবুকে ম্যাসেজ দিচ্ছে এবং বাসাতেও আসছে এটা, ওটা সমস্যা নিয়ে। চেষ্টা করি সমাধান দেবার। আর না পারলে (ফান করে) বলি ফোনটা পাল্টে ফেলে সহজ কোন ফোন কিনে নেও। :p বলেই আমি নেটে ঘাটতে থাকি তার সমস্যাটি সমাধানের জন্য।
আমার সেই সকল সমস্যায় পড়া ভাই/বোনদের কথা মনে করেই ‘এন্ড্রয়েড’ নিয়ে আমার এই পোস্ট ! 🙂
এখানে এন্ড্রয়েড এর বেসিক নিয়ে যেমন আলোচনা করার চেষ্টা করবো, তেমনি এ্যাপস ও গেমস নিয়ে এবং এ্যাপস ডেভেলপিং নিয়েও আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তবে সব কিছুর একটা ধারাবাহিকতা আছে। আমি সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই এই সকল ভূমিকা এবং ইতিহাস দিয়ে শুরু করছি।
তবে বিস্তারিততে যাবো না। অনেকেই আছে একদম নতুন তারা জানতে চায় ঠিকই কিন্তু বিস্তারিত আলোচনার জন্য তারা যা জানতে চায় তাই তাদের অজানা রয়ে যায়, সেদিকটাও লক্ষ রেখে এখানে লেখার চেষ্টা করছি।
এন্ড্রয়েড কি :
এন্ড্রয়েড হচ্ছে একটি লিনাক্স-বেইসড অপারেটিং সিস্টেম, যা ডিজাইন করা হয়েছে প্রধানত টাচ-স্ক্রিন ডিভাইসের জন্য যেমন স্মার্ট-ফোন এবং ট্যাবলেট কম্পিউটার। আর এই অপারেটিং সিস্টেমটি যারা ডেভেলপ করেছেন সেই ডেভেলপারদেরকে গুগল কিনে নেয় ২০০৫ সালে। তারপর থেকেই ‘এন্ড্রয়েডের’ মালিক এখন গুগল।
এনড্রয়েড ইন-কর্পোরেট প্রতিষ্ঠা হয়েছিল পালো আল্টো, ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০০৩ সালের অক্টোবরে। এটার প্রতিষ্ঠাতা এন্ডি রুবিন (ডেন্জারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা), রিচ মাইনার (`কমিউনিকেশনস, ইনকর্পোরেটেডের সহ প্রতিষ্ঠাতা), নিক সিয়ারস (টি-মোবাইলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট) এবং ক্রিস হোয়াইট (ওয়েবটিভি’র ডিজাইন এবং ইন্টারফেস প্রধান)। যেহেতু তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ছিলেন তাই এনড্রয়েড প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম চালাত অনেকটা লুকিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে এটা বলা হত যে তারা শুধু মোবাইলের একটি সফটওয়্যারের কাজ করছে।
এন্ড্রয়েড সফটওয়্যারটি জাভা এপ্লিকেশনের সমন্বয়ে গঠিত। মানে এর ওএস বা অপারেটিং সিস্টেম তো লিনাক্সবেইসড এবং এর এপ্লিকেশন ডেভেলপ করা যায় জাভা দিয়ে।
এন্ড্রয়েডের বৈশিষ্ট্য :
হ্যান্ডসেট ডিসপ্লে |
এটি বড়, ভিজিএ, ২য় মাত্রার গ্রাফিক্স লাইব্রেরী, ৩য় মাত্রার গ্রাফিক্স লাইব্রেরী (ওপেনজিএল ইএস ২.০ উপর ভিত্তি চলে) এবং আগের স্মার্টফোনগুলোর প্রচলিত ডিসপ্লে নকশা সাপোর্ট করে। |
সংরক্ষণ |
এসকিউলিট, একটি ছোট কিন্তু শক্তিশালী রিলেশনাল ডেটাবেজ সিস্টেম, ব্যবহৃত হয় তথ্য জমা রাখার কাজে। |
সংযোগ |
এনড্রয়েড যেসব সংযোগ বা যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রযুক্তি সাপোর্ট করে সেগুলো হল জিএসএম/ইডিজিই, আইডিইএন, সিডিএমএ, ইভি-ডিও, ইউএমটিএস, ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই (প্রক্সি সার্ভার দিয়ে কোন সংযোগ নেই এবং এড হক ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক নেই), এলটিই, এনএফসি এবং ওয়াইম্যাক্স। |
||
বার্তা প্রেরণ ব্যবস্থা |
এসএমএস এবং এমএমএস দুটোই সাপোর্ট করে, যাতে থ্রেড টেক্সট মেসেজিং এবং এখন এনড্রয়েড ক্লাউড টু ডিভাইস মেসেজিং ফ্রেমওয়ার্কও (সি২ডিএম) রয়েছে এবং এটি পুশ মেসেজিং সিস্টেমের একটি অংশ। |
একাধিক ভাষা |
এনড্রয়েড একাধিক ভাষা সাপোর্ট করে। এনড্রয়েড জিন্জারব্রেড ২.৩ তে এর সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। এনড্রয়েড ফন্ট রেন্ডারিং করতে পারে না অফিসিয়াল ঘোষনা দেয়ার পরেও যেমন হিন্দি ভাষা। |
জাভা সাপোর্ট |
এনড্রয়েডের বেশিরভাগ এপ্লিকেশন লিখা হয়েছে জাভা দিয়ে কিন্তু জাভা ভার্চুয়াল মেশিন প্লাটফর্ম নেই এটাতে এতে করে জাভা বাইট কোড এক্সিকউট করা যায় না। জাভা ক্লাসগুলো ডেলভিক এক্সিকউটেবলে কম্পাইল (রূপান্তর) করে ডেলভিক ভার্চুয়াল মেশিনে চলে। ডেলভিক হল বিশেষ ভার্চুয়াল মেশিন যেটা নকশা করা হয়েছে বিশেষভাবে এনড্রয়েডের জন্য যাতে সেটা ব্যটারির কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করে মোবাইল চালাতে পারে। এতে মেমোরি এবং সিপিইউ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। জে২এমই ব্যবহার করা যাবে থার্ড পার্টি এপ্লিকেশন ব্যবহার করে। |
||
যেসব মাধ্যম সাপোর্ট করে |
এনড্রয়েড যেসব অডিও/ভিডিও/স্থির মাধ্যম সাপোর্ট করে তা হলঃ ওয়েবএম, এইচ.২৬৩, এইচ.২৬৪ (থ্রীজিপি অথবা এমপিফোর কন্টেইনারে), এমপিইজি-৪ এসপি, এএমআর, এএমআর-ডব্লিউবি (থ্রীজিপি কন্টেইনারে), এএসি, এইচই-এএসি (এমপি৪ অথবা থ্রীজিপি কন্টেইনারে), এমপিথ্রী, এমআইডিআই, ওজিজি ভোর্ভিস, এফএলএসি, ডব্লিউএভি, জেপিইজি, পিএনজি, জিআইএফ (যদিও আগের ভার্সনগুলো জিআইএফ সাপোর্ট করত না। |
ওয়েব ব্রাউজার |
এনড্রয়েডে যে ওয়েব ব্রাউজার আছে সেটা মুক্ত ওয়েবকিট ভিত্তিক নকশায় তৈরী, এতে আবার গুগলের ক্রোম ভি৮ জাভাস্ক্রীপ্টও রয়েছে। ব্রাউজারটি ১০০ তে ৯৩ স্কোর করেছে এসিড৩ টেস্ট। |
যেসব স্ট্রীম মাধ্যম সাপোর্ট করে |
আরটিপি/আরটিএসপি স্ট্রীমিং (থ্রীজিপিপি পিএসএস, আইএসএমএ), এইচটিএমএল প্রোগ্রেসিভ ডাউনলোড (এইচটিএমএল৫)। এডোবি ফ্ল্যাশ স্ট্রিমিং (আরটিএমপি) এবং এইচটিটিপি ডাইনামিক স্ট্রিমিং যেটা ফ্ল্যাশ দ্বারা চলে। এ্যপল এইচটিটিপি লাইভ স্ট্রীমিং রিয়েলপ্লেয়ার ফর মোবাইল, এবং অপারেটিং সিস্টেম ৩.০ (হানিকম্ব) দিয়ে সাপোর্ট করে। |
||
বাড়তি হার্ডওয়্যার সাপোর্ট |
এনড্রয়েড ভিডিও/স্থিরচিত্রের ক্যামেরা, টাচস্ক্রীন, জিপিএস, একসিলেরোমিটার, জাইরোস্কোপ, ম্যাগনেটোমিটার, গেমিং কন্ট্রোল, প্রক্সিমিটি এবং প্রেসার সেন্সর, থার্মোমিটার, একসিলারেটেড ২ডি বিট ব্লিট, এবং একসিলারেটেড ৩ডি গ্রাফিক্স সাপোর্ট করে। |
ব্লুটুথ |
এটি এ২ডিপি, [এভিসিআরপি], ওপিপি, পিবিএপি, ভয়েস ডায়ালিং এবং কন্টাক্ট বিনিময়। কিবোর্ড মাউস এবং জয়স্টিক সাপোর্টও দিয়ে থাকে (উৎপাদনকারী যদি দিয়ে থাকে অথবা থার্ড পার্টির কাছ থেকে) এবং এনড্রয়েড ৩.০ (হানিকম্ব) এইচআইডি পুরোপুরি সাপোর্ট দেবে। |
একাধিক-টাচ |
এনড্রয়েড একাধিক টাচ (একই সময়ে) সাপোর্ট করে। এটি প্রথম যেসবহ্যান্ডসেটে ব্যবহার করা হয় তার একটি হল এইচটিসি হিরো. এই বৈশিষ্ট্যটিকে বন্ধ করে দেয়া হয় কারনেল লেভেল থেকে (সম্ভাবনা হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে সেইসময়ে এ্যপলের প্যাটেন্ট করা টাচ-স্ক্রীন প্রযুক্তির বিধান যাতে লঙ্গন না হয় সে কারনে). সম্প্রতি কিছু হ্যান্ডসেটে এটি আবার দেখা যায় যেমন নেক্সাস ওয়ান এবং মটোরোলা ড্রয়েড। |
||
ভিডিও কলিং |
এনড্রয়েড ভিডিও কল সাপোর্ট করে না কিন্তু কিছু হ্যান্ডসেটে যদি কাষ্টমাইড করা অপারেটিং সিস্টেম থাকে তবে সেটা সাপোর্ট করতে পারে। যেমনস্যামস্যাঙ গ্যালাক্সি এস অথবা গুগল টক দিয়ে (এনড্রয়েড ২·৩·৪) |
একাধিক কাজ |
মাল্টিটাস্কিকিংয়ের জন্য বিভিন্ন এপ্লিকেশন রয়েছে। |
একাধিক কাজ |
মাল্টিটাস্কিকিংয়ের জন্য বিভিন্ন এপ্লিকেশন রয়েছে। |
ভয়েস ভিত্তিক বৈশিষ্ট্য |
প্রথম থেকেই ভয়েস দিয়ে গুগল সার্চ চালু রয়েছে। ভয়েস দিয়ে কল, টেক্সট লেখা, নেভিগেশন করার সুবিধা রয়েছে এনড্রয়েড ২.২ থেকে পরবর্তী ভার্সনগুলোতে। |
তিথারিং |
এনড্রয়েড তিথারিং সাপোর্ট করে, যা দিয়ে ফোনকে ওয়্যারলেস হটস্পট করা যায়। এনড্রয়েড ২.২’র আগের ভার্সনগুলোতে এটি থার্ড পার্টি সফটওয়্যার দিয়ে সাপোর্ট করা যায়। |
||
সোর্স মডেল |
ওপেন সোর্স বা মুক্ত সফটওয়্যার। |
এন্ড্রয়েড ভার্সন :
২.০/২.১ (এক্লিয়ার), ২.২ (ফ্রোয়ো), ২.৩ (জিঞ্জারব্রেড), ৩.০/৩.১ (হানিকম্ব), এছাড়াও ‘আইস ক্রিম স্যান্ডউইচ’ যা জিঞ্জারব্রেড এবং হানিকম্ব এর সমন্বয়ে তৈরি একটি অপারেটিং সিস্টেম যাকে ‘কোহেসিভ হোল’ বলা হচ্ছে।
এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করে এর একটি নাম দেয়া হয়। অনেকেই এই নামগুলির সাথে ভার্সনের মিলগুলি জানে না তাই সংক্ষেপে দিয়ে রাখলাম।
এন্ড্রয়েডের ব্যবহার :
যদিও এনড্রয়েড তৈরি করা হয়েছিল স্মার্ট-ফোন এবং ট্যাবলেটগুলোর জন্য তবুও এর পরিবর্তন-সক্ষমতা ও মুক্ত ব্যবহার বৈশিষ্ট্যের কারণে অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে যেমন ল্যাপটপ, নেটবুক, স্মার্ট-বুক এবং ই-বুক রিডার প্রভৃতি।
আরও জানা যায়, গুগল তাদের এনড্রয়েডকে টেলিভিশনে আনতে আগ্রহী গুগল টিভির মাধ্যমে। এছাড়াও এই অপারেটিং সিস্টেমটি হাতঘড়ি, হেড-ফোন, গাড়ির সিডি এবং ডিভিডি প্লেয়ার, ডিজিটাল ক্যামেরা, বহনযোগ্য মিডিয়া প্লেয়ার এবং ল্যান্ড লাইনগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
(বি: দ্র: এডমিনের অনুমতি ব্যতীত এই লেখা অন্য কোথাও পোস্ট করা যাবে না। একান্ত প্রয়োজনে যদি কেউ শেয়ার করতেই চান তাহলে অবশ্যই এই ব্লগটির লিংক ব্যবহার করুন।)
Appreciating the dedication you put into your site and in depth
information you offer. It’s awesome to come across a blog every once in a while
that isn’t the same outdated rehashed material.
Excellent read! I’ve bookmarked your site and I’m including your RSS feeds to my
Google account.
Thanks a lot.
ভালো লিখেছেন 🙂 চালিয়ে যান 🙂
ভালো লিখেছেন 🙂 চালিয়ে যান 🙂
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। 🙂