কম্পউটারের কথা মনে হলেই প্রথমে যে বিষয়ের কথা মনে হয়, তা হলো কম্পিউটার গেমস। কম্পিউটার আছে কিন্তু গেমস নাম এমন পিসি খুব একটি দেখা যায় না।
গেমস শুধু এখন আর বাচ্চাদেরই পছন্দ তা নয়, বড়রাও গেমস খেলতে খুব পছন্দ করেন। আমেরিকায় সব থেকে বেশী গেমস খেলতে দেখা যায় যাদের বয়স ৩০ বা উপরে।
গেমস যারা খেলে তারা সময় কাটানোর জন্য শুধু গেমস খেলে তা নয়, এমনও হয় গেমস খেলতে খেলতে তারা অন্যান্য কাজের সময়ও হারিয়ে ফেলে। এখন সময় কাটানোর জন্য কেউ গেমস খুঁজে না বরং গেমস খেলা জন্য সময় খুঁজে।
কম্পিউটার গেমস গণিতে দক্ষতা বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে। দেখা গেছে প্রতিদিন নিয়মিত কম্পিউটার গেমস খেললে গণিতে দক্ষতা বাড়ে।
সম্প্রতি স্কটিশ স্কুলগুলোতে এ ব্যাপারে একটি গবেষণা চালিয়ে এর প্রমাণ মিলেছে। স্কটল্যান্ডের লার্নিং অ্যান্ড টিচিং স্কটল্যান্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ‘ব্রেইন ট্রেনিং’ নামের একটি কম্পিউটার গেমের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালায়। লার্নিং অ্যান্ড টিচিং স্কটল্যান্ড কাজ করছে ইন্সপেক্টরেট অব এডুকেশন এবং ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। গবেষণায় দেখা গেছে, কম্পিউটার গেমটি খেলায় শিক্ষার্থীদের মনঃসংযোগ ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে।
গেমিং কনসোল নিনটেন্ডো ডিএসের ব্রেইন গেমটি নিয়ে স্কটল্যান্ডের ৩২টি স্কুলের ৬০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে গবেষণা চালায় লার্নিং অ্যান্ড টিচিং স্কটল্যান্ড। গবেষণায় একদল শিক্ষার্থীকে নয় সপ্তাহ তাদের ক্লাস শুরুর আগে ২০ মিনিট ধরে গেমটি খেলতে দেওয়া হয়।
গেমটির মধ্যে রয়েছে রিডিং টেস্ট, সমস্যা সমাধানার এক্সারসাইজ ও মেমোরি পাজল। অন্য একটি দল আগের মতোই ক্লাস করতে থাকে।
গবেষণা শুরু ও শেষে দুটি দলকেই পরীক্ষা করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যে দলটি গেম খেলছে তারা অন্যদের চেয়ে ৫০ শতাংশ উন্নতি করেছে। তারা গেম না খেলা দলটির চেয়ে পাঁচ মিনিট আগেই পরীক্ষা শেষ করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়িতে গেম খেললেও শিক্ষার্থীদের উন্নতি হয়েছে। আর এ ব্যাপারে ছেলে ও মেয়েতে কোন পার্থক্য নেই। এমনকি গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থীই গেমটি খেলার পর অনিয়মিত ও দেরি করে ক্লাসে পৌঁছানো কমিয়েছে।
লার্নিং অ্যান্ড টিচিং স্কটল্যান্ডের উপদেষ্টা ডেরেক রবার্টসন জানান, এ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এ ধরনের কম্পিউটার গেমে দক্ষতা বাড়ে। আর স্কুলে ভালো ও খারাপ ছাত্রের ব্যবধানটাও কমে আসে। এ ধরনের কম্পউটার গেম খললে সব শিক্ষার্থীই এমন সব পরিস্থিতিতে সাফল্য পাবে, যে পরিস্থিতিতে তারা আগে কখনো পড়েনি।
দুটি নতুন গেমস নিয়ে আলোচনা করা হলো :
মিউজিক ভিডিও গেইম ‘রক ব্যান্ড’
Games_rock_band.gif এবার গেইম তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছে এন্টারটেইনম্যান্ট কোম্পানি ‘এমটিভি’। সমপ্রতি তারা বাজারে ছেড়েছে মিউজিক ভিডিও গেইম ‘রক ব্যান্ড’। গেইম’র কন্ট্রোল এবং সফটঅয়্যারসহ গেমটির দাম রাখা হয়েছে ১৭০ মার্কিন ডলার। গেমটি প্রকাশ করে অ্যাকটিভিশন ইনকর্পোরেশন।
রক ব্যান্ডের আদলে তৈরি এ গেইমটি ‘গিটার হিরো’ সিরিজের একটি পর্ব। বাজারে আসার পরপরই এটি গেমারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
রক ব্যান্ড গেমটিতে একসঙ্গে চারজন খেলতে পারবেন। খেলার জন্য তাদের গিটার, বেইজ, ড্রাম এবং ভোকাল এই চারটির মধ্যে যে কোনও একটি বিষয় বেছে নিতে হবে। পর্দায় প্রদর্শিত নড অনুযায়ী তাদের গিটার অথবা ট্যাপ ড্রামগুলো বাজাতে হবে। গেমার চাইলে এর সঙ্গে গানও যুক্ত করতে পারেন। যদি নডগুলো ঠিকমতো বাজানো হয়, তবে গানটি ঠিকভাবে চলবে এবং ব্যান্ডের পয়েন্ট বাড়বে।
বোষ্টন ভিত্তিক গেম স্টুডিও ‘হারমোনিক্স’-এ তৈরি হয়েছে ‘রক ব্যান্ড’ গেমটি। এই গেম স্টুডিওটি শুরু হয়েছিল এমআইটির ছাত্রদের হাতে। হারমোনিক্স এর প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স রিগোপোলাস বলেন, “এই প্রথম আমরা স্টুডিওর সামর্থ পূর্ণ ব্যবহার করতে পেরেছি। আমাদের জন্য এটি গর্বের বিষয়।”
আরেকটি নতুন গেমস ক্রিকেটপ্রমীদের জন্য।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট ক্যাপটেইন-থ্রি
আসলে যারা সত্যিকারের ক্রিকেট ভক্ত তাদের ভাল লাগার মত একটি গেম হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট ক্যাপটেন থ্রি’। যারা এ গেমটি তৈরির সঙ্গে যুক্ত তারা সবাই কিন’ ক্রিকেট খেলার মহাভক্ত, কাজেই প্রিয় গেমার, নিশ্চিন্তে আপনিও এই গেমটির মাধ্যমে ক্রিকেট আনন্দে শরিক হয়ে যেতে পারেন। এ Games112.gifগেমটি আপনাকে বিভিন্ন আলাদা আলাদা মোডে ক্রিকেট খেলতে এবং আপনার টিমকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
এই গেমে আপনার রোল হবে ক্রিকেট দলের ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করা। ক্রিকেটিং এবং আপনার দলকে পরিচালনার যত ব্যবস্থাপনাগত দিক আছে তার সবগুলোর দিকেই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, যার মধ্যে আছে বাজেটিংসহ আরো নানা দিক। এবং এসবের মাধ্যমেই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে আপনার ক্রিকেট টিমটিকে ধীরে ধীরে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ টিমগুলোর একটি হিসেবে গড়ে তোলা।
গেমপ্লে-তে কিছু বিরক্তিকর ব্যাপারকে ঝেঁটে ফেলে দিতে পারলে এটি আরও ভাল একটি গেম হিসেবেই আত্নপ্রকাশ করতে পারত। গেমটির খুব বাজে গ্রাফিক্স ইঞ্জিনও এটির সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁডিয়েছে। এই গেমটিতে মোড গেমপ্লে মোড আছে পাঁচটি। এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ফুল গেম মোড। এটির সাহায্যে আপনি পারবেন একটি কাউন্টি ক্রিকেট সাইডকে পরিচালনার কাজটি করতে, উদ্দেশ্য থাকবে এ কাজে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টিমের অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।
Games111.gif এর পরের মোডটির নাম কাউন্টি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল, এখানে একটি কাউন্টি এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্রিকেটে টিমকেই আপনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন। পারবেন নতুন নতুন মেধাকে চিহ্নিত করতে এবং তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন খেলোয়াড়ে পরিণত করতে।
এছাড়াও আছে ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ার মোড, এখানে আপনি আপনার পছন্দের একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টিমের সব দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে নিতে পারবেন। পারবেন নিজের পছন্দমত একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট-এর আয়োজন করতে। একই সঙ্গে পারবেন টেস্ট ম্যাচের আয়োজন করতেও। এখানে বিশ্বেও সবগুলো ক্রিকেটিং সেশনের সঙ্গেই আপনি খেলতে পারবেন, সেই সঙ্গে আছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজনও। আরো দুটো মোড আছে, ম্যাচ সিরিজ মোড এবং ওয়ার্ল্ড কাপ মোড। নিঃসন্দেহে শেষের মোডটিই বেশি আকর্ষণীয়, বিশেষ করে যারা এই প্রথম এ ধরনের খেলা খেলতে এসেছে তাদের জন্য এই মোডটি খুবই আকর্ষণীয় বলে বিবেচিত হবে। এখানে আপনি ১৯৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৭ গেম তিনটি ওয়ার্ল্ড কাপের আপনার পছন্দমত সেরা তিনটি ক্লাসিক ম্যাচ আবার খেলতে পারবেন।
এই গেমটির একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আপনি যদিও সরাসরি ক্রিকেটারদের খেলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না, স্লাইডারের সাহায্যে তাদের খেলার আক্রমণাত্নতা, বল লাইন, ব্যাটিং স্টাইল ইত্যাদিকে পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি পরোক্ষভাবে তাদের খেলার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারবেন। এছাড়া আপনি ইন্টারনেটে অন্যান্য অনলাইন প্রতিদ্বনদ্ধীর সঙ্গেও এই গেমটি খেলতে পারবেন। সন্দেহ নেই, এই মোডটিও আপনি বেশ পছন্দ করবেন।
প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার : পেন্টিয়াম থ্রি -১ গিগাহার্জ, র্যাম ২৫৬ মেগাবাইট, এজিপি কার্ড ৬৪ মেগাবাইট এবং হার্ড ড্রাইভ স্পেস ৩ গিগাবাইট।
লেখা : এলিন (এডমিন) (২০০৮)
সাহায্য : ইন্টারনেট
Thanks.