ব্যাট ফ্লাওয়ার : বাদুর-মুখো এক অদ্ভুত ফুল

bat_devils_flower
ব্যাট অথবা ডেভিলস ফ্লাওয়ার

পূর্বে আমি একটি পোস্ট করেছিলাম বানরের মত মুখওয়ালা ‘অর্কিড’ ফুল নিয়ে। আজও একটি ফুল দেখলাম নেট ঘাঁটতে গিয়ে, যা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এই ফুলটিও কম অদ্ভুত নয়। পৃথিবী বড়ই বিচিত্র এই ফুলটি আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।

ফুলটিকে দুর থেকে দেখলে অনায়াসেই মনে হতে পারে সায়েন্স ফিকশন মুভির কোন এক ভিন্ন গ্রহের প্রাণী গাছে গাছে ঝুলে রয়েছে। অনেক সময় মনে হয় উড়ন্ত বাদুরের মতো, তাই একে ‘ব্যাট ফ্লাওয়ার’ বলে। ভালো করে দেখলে এই ফুলগুলিকে মনে হবে বাদুর তার মুখটাই যেন হা করে আছে আবার কখনও ভিন্ন কোন প্রাণীর কথাও মনে হতে পারে। কিছু কিছু ফুলকে দেখলেই হিংস্র ও ভয়ংকর বলে মনে হবে, তাই হয়তোবা এর আরেক নাম ‘ডেভিলস ফ্লাওয়ার’।

প্রিডেক্টর ফিল্মটি যে সময় তৈরি করা হয়েছিল তখন এই ফুলটি আবিষ্কার হয় নি। কিন্তু অবাক ব্যাপার সেই ফিল্মটিতে এই ব্যাট ফুল দেখানো হয়েছিল। ভয়ংকর এক কাল্পনিক প্রাণী হিসাবে একে তৈরি করা হয়েছিল। ফিল্মটিতে দেখানো হয়েছিল যে, ফুলগুলি ছিল কালো বাদুরের মত এবং তারা নিজে নিজে বাড়তে পারতো ১২ ইঞ্চিরও বেশি এবং ‘গোঁফ’ ছিল ৩০ ইঞ্চিরও বেশি।

ইহা এখন কল্পনার রাজ্য থেকে বাস্তব রাজ্যে চলে এসেছে। সেই বাদুর-মুখো, ভয়ংকর দেখতে। মনে হয় ভিন্ন গ্রহের প্রাণী।

পুরোপুরি এই ব্যাটফ্লাওয়ারগুলি ভুতুড়ে ফুল যা আমাদের আশেপাশেই রয়েছে। ফুলগুলি এমন যে অনায়াসেই মনে হতে পারে, ‘মরটিসিয়া এ্যাডামস’ তার সঙ্গীত বিদ্যালয়ে এই ফুলকে রাখতে পছন্দ করতেন।

bat_devils_flower
ব্যাট অথবা ডেভিলস ফ্লাওয়ার

সংক্ষেপে মরটিসিয়া এ্যাডামস : ‘মরটিসিয়া এ্যাডামস’ একটি কাল্পনিক চরিত্র যা ‘দ্যা এ্যাডামস ফ্যামিলি’ নামক সিরিজের ভিতরে দেখতে পাওয়া যায়। সিরিজটিতে ‘মরটিসিয়া এ্যাডামস’ ছিলেন একজন মা ও কর্ত্রী। এই সিরিজটি তৈরি করেন একজন কার্টুনিস্ট, নাম ‘চার্লস এ্যাডামস’। তিনি তার প্রথম স্ত্রী ‘বারবারা’ কে ভিত্তি করে এই ক্যারেক্টারটি নির্মাণ করেন। এই বারবারা  পরবর্তীতে তারই এক সহকর্মী, ‘জন হার্সি’ এর দ্বিতীয় স্ত্রীতে পরিণত হয়েছিলেন। যা হোক এদিকে আর যাবো না।

morticia adams
মরটিসিয়া এ্যাডামস

এই বাদরমুখো ফুলটি চীনের ‘ইয়ুনান প্রভিন্স’ নামক স্থানে দেখতে পাওয়া যায় । এছাড়াও আরও দুইটি যায়গাতেও পাওয়া যায়, সেগুলি হচ্ছে থাইল্যান্ড এবং বার্মা।

ব্যাট ফ্লাওয়ার যদিও অস্বাভাবিক দেখতে কিন্তু  বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বেড়েই চলছে এবং বিভিন্ন বাগানে একে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ইহা বাগানের পরিবেশের থেকে বনেই সব থেকে ভালোভাবে জন্মায়।

অদ্ভুত এই ফুলটির প্রথম পরিচয় পাওয়া যায় ইউরোপ এবং এমেরিকাতে গত শতাব্দীতে।

আজ ইহা একটি উদ্ভট ফুল হিসাবে পরিচিত – যা গাড় বেগুনি (প্রায়ই কালো) রঙের মত দেখায়। এলাকার বাইরের কিছু লোক এই ফুলগুলির গঠন দেখে তাদের অশুভ মনে করে।

অনেকেই ‘টাক্বা গাছ’ নামক এক প্রকার গাছের নাম শুনে থাকতে পারেন। এই ‘টাক্কা গাছ’ হচ্ছে ‘ব্যাট ফ্ল্যাওয়ার গাছ’ এর আরেক নাম।

এই ফুলগুলিকে যদিও ক্ষতিকারক মনে হতে পারে কিন্তু সত্যিকার অর্থে ইহা কোন ক্ষতি করে না।

এই গাছগুলি সাধারণত তিন অথবা চারটি পূর্ণ আকারের পাতা উৎপন্ন করে।  প্রতিটি গাছ আবার ছয় থেকে বারোটির মত ফুল উৎপন্ন করতে পারে। যখন ‘বীজ ক্যাপসুল’ দৃষ্টিগোচর হয় সেই সময় তারা দেখতে অনেকটা ‘এ্যালিয়েন প্রজাতির’ মত দেখায়। যতক্ষণ তারা চাষের মধ্যে থাকে ততক্ষণ ধীরে ধীরে তারা আলাদা হতে থাকে এবং এর সময় লাগতে পারে ১৮ মাস। তারা অঙ্কুরিত হতে সময় নিতে পারে এক বছর। তাই যাদের ধৈর্য্য কম তাদের পক্ষে এই ফুলের চাষ করা কঠিন হয়ে যায়।

( বি: দ্র: এই লেখাটি লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও পোস্ট করা যাবে না। )

পোস্টটি শেয়ার করুন :

এলিন

I'm Alin. Owner of this Blog. This is my personal Bengali Blog. I live in Dhaka, Bangladesh.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *