ফ্রাঙ্ক শেলক নামক একজন ক্রোটিয়ান মিউজিসিয়ান (যিনি একজন মিউজিক টিচারও), ভাগ্য তার জন্য দুর্ভাগ্যের প্রথম রেখাটি আঁকে ১৯৬২ সালে একটি ট্রেন যাত্রায়। ট্রেন যাত্রাটি ছিল সারাজেভো নামক শহর থেকে ডুব্রভনিক নামক শহরে। হঠাৎ করে ট্রেনটি সবাইকে অবাক করে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে এবং বরফের একটি নদীতে গিয়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ১৭ জন যাত্রী মারা যায়। শেলক সাঁতার জানতো এবং একটি তীরে উঠে সেইবার কোনমতে বেঁচে যায়। কিন্তু বেঁচে গেলেও তিনি হাইপোথেরমিয়াতে ভোগেন এবং তার একটি হাত ভেঙ্গে যায়।
এক বছর পর তখন একটি প্লেনে তিনি, হঠাৎ করেই সেই প্লেনটির দরজা খুলে যায় এবং উড়ে বাইরে পড়ে যায়। শেলকও সেই দরজার সাথে সাথে প্লেন থেকে বাইরে পড়ে যায়। কিন্তু প্লেন থেকে পড়ে গেলেও শেলক প্রাণে বেঁচে যায়। কারণ শেলকের প্লেন থেকে পড়ে যাওয়ার কিছু সময় পরই প্লেনটি ক্র্যাশ করেছিল। যদিও তাঁর হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছুদিন।
তারপর একদিন ১৯৬৬ সালে, শেলক বাস এ যাত্রা করছিল, বাসটি হঠাৎ করেই রাস্তা ছেড়ে দিয়ে নদীতে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেলক আবার সেই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায়। সামান্য আহত হয়েছিল তিনি।
১৯৭০ সালে একদিন তিনি তার প্রাইভেট গাড়ি ড্রাইভ করছিল, সেই গাড়ীতে দূর্ভাগ্যক্রকে আগুন ধরে যায়। কিন্তু পুরো গাড়িটিতে আগুন ধরে যাওয়ার আগেই তিনি গাড়ি থেকে বেড় হতে সক্ষম হন।
১৯৭৩ সালে, শেলক আরেকদিন অন্য একটি গাড়ি ড্রাইভ করছিল। হঠাৎ করে সেই গাড়িটিতে জ্বালানির ত্রুটির কারণে গ্যাস নির্গত হওয়া শুরু করে যা একসময় আগুন ধরে ফেলে গাড়িটিতে। আবার তিনি আহত হন, কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান।
১৯৯৫ সালে একবার তিনি একটি চলন্ত বাসের সাথে ধাক্কা খান। সেইবারও তিনি সামান্য আহত হন ঠিকই কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান।
সবশেষে একবার ১৯৯৬ সালে তিনি গাড়ি ড্রাইভ করছিলেন পাহাড়ি এলাকায়। তিনি যখন গাড়িটি নিয়ে বাঁকিয়ে আসবেন এমন সময় সেখানে একটি চলন্ত ট্রাক দেখতে পান, যা তার দিকেই আসছিল। তিনি গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়তে সক্ষম হন এবং দেখেন তার গাড়িটিও লাফিয়ে উঠে তার থেকে প্রায় ৩০০ ফিট উপরে।
পরবর্তীতে শেলক ২০০৩ সালে তার জীবনে প্রথমবারের মত একটি লটারির টিকেট কিনে আনেন। তিনি সেইবার লটারিটি জিতেছিল যা ছিল ১ মিলিয়ন ডলার এর লটারি।
তাহলে এই ব্যক্তিটিকে পৃথিবীর সবথেকে ভাগ্যবান বলা কি ভুল হবে ?